এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - এলোভেরা মুখে মাখলে কি হয়।
প্রিয় পাঠক, আপনার শরীরকে সুস্থ এবং চাঙ্গা যদি রাখতে চান তাহলে আপনাকে এলোভেরা
নিয়মিত সেবন করতে হবে। তাই আজকের টপিক হল অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা
দিকসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত
পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ,
যেটাই অমৃত সেটাই বিশ কথাটা শুনতে একটু অবাক হলেও এটাই বাস্তব। কেননা এলোভেরা
খাওয়ার এমন কিছু নিয়ম রয়েছে যা বেনিয়মে খেলে আপনার জন্য বিশেষ সমতুল্য হতে
পারে তাই এলোভেরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানা আপনার জন্য অনেক
জরুরী। তাই আপনারা যদি এলোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা দিকসমূহ জানতে চান তাহলে
শেষপর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, এলোভেরা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান যা খেলে
আমাদের শরীর যৌবন সতেজ সুন্দর রাখে এবং আমাদের শরীর চাঙ্গা রাখতে বিশেষ কার্যকারী
এই অ্যালোভেরা। তাই আজকে আপনাদেরকে এলোভেরার কিছু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত জানাবো এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি, এলোভেরা খাওয়ানোর
নিয়ম,
আরো পড়ুনঃ শহীদ দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য
খালি পেটে এলোভেরা খেলে কি হয় এবং মুখে মাখলে কি হয় সমস্ত বিষয় নিয়ে নিম্নে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি সমস্ত টপিক মনোযোগ সহকারে পড়লে আশা করি এলোভেরা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই এলোভেরা সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি স্টেপ বাই
স্টেপ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই জানেন না এলোভেরা আশ্চর্য উপকারিতা সম্পর্কে নিয়মিত
এলোভেরা শরবত খেলে কি হয় জানেন কি? আপনি যদি প্রতিনিয়ত এক গ্লাস এলোভেরা শরবত
খেতে পারেন তাহলে আপনার স্কিন সৌন্দর্য বৃদ্ধি হবে। এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যে
বিষয় হলো সেটা হলো আপনার যৌবনকে আজীবন ধরে রাখতে পারবেন এলোভেরার শরবত পান করতে
পারলে। এছাড়াও এলোভেরা কিছু রোগকে দমন করতে সাহায্য করে যেমন।
এলোভেরা খাওয়ার ও উপকারিতাঃ
টক্সিন নির্মূল করতে অ্যালোভেরার উপকারিতাঃ টক্সিন এর মাত্রা আপনার শরীর
থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় কমে গেলে আপনার কর্ম ক্ষমতা আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।
যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ আক্রমণ করে। এলোভেরা সেবন করলে এন্টিঅক্সিডেন্টের
মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যার ফলে দেহে জমে থাকা টক্সিন এর মাত্রা ধীরে ধীরে
কমতে থাকে এবং আপনার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং আপনাকে আরো কর্মঠ
করতে সাহায্য করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ পেয়ারা গাছের রোগ ও প্রতিকার
হার্ড সুস্থ রাখতে এলোভেরার উপকারিতাঃ প্রতিনিয়ত এলোভেরা জুস খেলে
অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়ে যায় যার ফলে দেহের অন্যান্য উপকারের
পাশাপাশি হার্ড সতেজ ও কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এলোভেরার উপকারিতাঃ আপনি যদি সারাটা জীবন
সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে চান? তবে নিয়মিত এলোভেরার জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
অ্যালোভেরার এই উপাদানটি সেবন করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি বৃদ্ধি
পায় যার ফলে সর্দি কাশি থেকে শুরু করে ছোট খাটো রোগ জীবনে আশে পাশেও আসতে পারে
না।
বয়সের ছাপ কমাতে এলোভেরার উপকারিতাঃ অ্যালোভেরা প্রচুর পরিমাণ রয়েছে
ভিটামিন A, B, C, আপনার অনেকেই জানেন যে ভিটামিন A আমাদের স্কিন ভালো রাখতে
সাহায্য করে থাকে, এছাড়াও এলোভেরা ভিটামিন E, ও বিটা কেরোটিনের মত
এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা
ত্বকের
সুরক্ষা রাখতে সাহায্য করে ও কুঁচকে যাওয়া ত্বকের বা চামড়া কে টানটান করে, যার
ফলে আপনার বয়স বোঝা যায় না।
গ্যাস্ট্রিক
ও আলসার দূর করতে এলোভেরার উপকারিতাঃ
গ্যাস্ট্রিক
ও আনসার দূর করে এলোভেরা আমাদের ভিতরে থাকা
অতিরিক্ত
গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং লিভারকে ভালো রাখতে সাহায্য করে এলোভেরা
প্রতিনিয়ত প্রতিনিয়ত এলোভেরার শরবত পান করলে আপনার পেট ঠান্ডা থাকবে।
এলোভেরা খাওয়ার অপকারিতাঃ
-
প্রিয় পাঠক, এলোভেরার উপকারিতা অস্বীকার করার নয় কিন্তু এর কিছু সাইড ইপিকেট
রয়েছে অতিরিক্ত অ্যালোভেরা মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই চলুন
এলোভেরার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- আপনি অতিরিক্ত অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে এলার্জি জনিত রোগ হতে পারে যেমন চামড়ায় রেশ, ও দাঁত ইত্যাদি হতে পারে। এছাড়াও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে এবং বুক ও ঘাড়ে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- এলোভেরা গাছে লেটেক্স থাকার ফলে বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা হতে পারে যেমন কোলাইটিস, কোলন ডিজিজ, এপেন্ডিসাইটিস, ক্ষুদ্রান্তরের রোগ, আলসার, অর্শ, ও লিভার সিরোসিস ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
- ১২ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের ও গর্ভবতী মহিলা দের এলোভেরা খাওয়া উচিত নয়।
- এলোভেরা তে লেনেটিভ ও অ্যান্থোরোকুইনোন অতিরিক্ত মাত্রা থাকায় ডায়রিয়া, ও পেটব্যথা ইত্যাদি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এলোভেরা খাওয়ার নিয়ম
এলোভেরা শুধুমাত্র শরবত বানিয়ে খাওয়া যায়। এলোভেরা ডগার ভেতর থেকে জেলটা বের
করে নিন। জেল একটা গ্লাসে নিয়ে ওর ভিতরে কিছু পানি দিয়ে দিন এবং আপনি চাইলে
তোকমা ও দিতে পারেন
আরো পড়ুনঃ নবজাতক শিশুদের ঠান্ডা লাগলে করণীয়
এবং আপনি চাইলে লেবুর রস দিতে পারেন, মিষ্টি করার জন্য মধু কিংবা চিনি দিয়ে
সরপট্টি মিষ্টি করে সেবন করতে পারেন এরপরে এক চিমটি লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে
খেয়ে নিন।
এলোভেরার জুস খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে থাকে অ্যালোভেরা। আমাদের
যাদের বিভিন্ন ধরনের এনজাইম থাকার ফলে আমাদের পেটের গ্যাস বা এসিড বা পেটের মধ্যে
বুদবুদ বা পেটের কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে এ ধরনের সমস্যা আপনার যদি থেকে থাকে
তবে আপনি এলোভেরা জুস খেতে পারেন।
এটা খেলে আপনার পেটের বা হজম শক্তির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আপনি সপ্তাহে দুই
থেকে তিনবার এই এলোভেরার জুস সেবন করতে পারেন। এতে আপনার পেটের বা হজম শক্তির সকল
সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ আজওয়া খেজুরের উপকারিতা হাদিস
এলোভেরা জুস আপনি বাসায় বানাতে চাইলে আপনার কাটতে হবে তৈরি করতে হবে সময় লেগে
যেতে পারে আপনি চাইলে বাজার থেকে অ্যালোভেরার জুস এনে সেবন করতে পারে এতে করে
আপনার সুবিধা হবে। তবে আপনি যদি বাসায় বানাতে চান বানাতে পারেন কোন সমস্যা নেই।
এলোভেরা মুখে মাখলে কি হয়
এলোভেরাতে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন সি আপনারা অনেকেই জানেন যে
ভিটামিন এ আমাদের স্কিনের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। আমরা অনেকেই জানি
যে অ্যালোভেরা স্কিনের যত্নে বেশি উপকারী কেননা এলোভেরাতে রয়েছে ভিটামিন মিনারেল
স্কিন সুন্দর করতে সাহায্য করে। এবং কি বয়সের ছাপ দূর করতে এলোভেরা বিশেষ
কার্যকারী এটি লাগালে স্কিন টানটান হবে।
আপনারা যেভাবে উপাদানটি তৈরি করে স্ক্রিনে ব্যবহার করতে পারেন তা নিলে
তাহলেঃ
প্রথমে আপনি এলোভেরা কেটে পানির মধ্যে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ভিজিয়ে রাখবেন কেননা
অ্যালোভেরা কাটা সঙ্গে সঙ্গে তার ভেতর থেকে হলুদ আবরণ বের হয়ে আসে যা স্ক্রিনের
জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তাই আপনি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন পাঁচ থেকে দশ মিনিট এর পরে
তুলে ভেতর থেকে অ্যালোভেরার জেল বের করে নেন
আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও ২০ টি উপকারিতা
অবশ্যই মনে রাখবেন যাদের স্কিনে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা এই উপাদানটি ব্যবহার
করবেন না। একটি বাটিতে এলোভেরার জেল তুলে নিন এরপরে দুই চামচ কাঁচা দুধ দিয়ে দিন
এবং ভালো করে মিক্স করে নিন। এলোভেরা এই উপাদানটি শ্রীতো গরম দুই সময় ব্যবহার
করা যায়। প্রথমে আপনার স্কিন সুন্দর করে ধুয়ে নিন
এরপরে এই উপাদানটি আপনার পুরো স্কিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট মাসাজ করে নিন। এই
উপাদানটি আপনার স্কিনের বয়স্ক সাব দূর করবে এবং স্কিন উজ্জ্বল করতে সাহায্য
করবে। এই উপাদানটি আপনি প্রতিদিন কিংবা যতদিন ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারেন।
এলোভেরা জুস তৈরির নিয়ম
প্রিয় পাঠক, সকালেই আমরা কি খাই বাজে জিনিস খেয়ে থাকি বেশিরভাগ এই সময়। যদি
আপনি হেলদি কোন জিনিস খেয়ে থাকেন তবে আপনার শরীর সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে তাহলে
কি খাওয়া যায় সকালে খালি পেটে? হ্যাঁ এর উত্তর হল অ্যালোভেরার জুস।
আরো পড়ুনঃ পাকা কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
অ্যালোভেরার জুস আপনি খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি পেয়ে যাবেন অ্যালোভেরা
প্রচুর গুণ রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, এবং অন্যান্য পুষ্টি ভরপুর এলোভেরাই। তাই
চলুন এলোভেরা শরবত বানানোর সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- আপনি একটি পাত্রে কিছু পরিমাণ তকমা ভিজিয়ে রাখবেন এলোভেরা জুস বানানো ১০ মিনিট পূর্বে কেননা জুস বানানোর সময় তোকমা ভেজালে তোকমা ভালো ফুলবে না এই কারণে দশ মিনিট পূর্বে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
- প্রথমে আপনাকে একটি এলোভেরা থেকে এলোভেরার জেল বের করে নিতে হবে তার জন্য আপনাকে এলোভেরা ডগা কেটে ১০ মিনিট পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ১০ মিনিট পর পানি থেকে অ্যালোভেরার ডগা তুলে তার ভেতরকার জেল বের করে নিতে হবে একটি পাত্রে। এবং এলোভেরা জেল ৫ থেকে ৭ মিনিট ভালোভাবে মিক্স করে ঘুটে নিতে হবে যাতে করে এলোভেরা জেল একদম গলে যাতে যায।
- এর পরে নিতে হবে ভিজিয়ে রাখা তোকমা এলোভেরা জেল এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে অবশ্যই আপনি যে পরিমাণ জুস তৈরি করতে চান সেই পরিমাণ উপাদান গুলো নিতে হবে।
- একটা লেবু কেটে কয়েক ফোটার লেবুর রস দিয়ে দিতে হবে অ্যালোভেরার জেল ও তোকমার ভিতরে
- কিছু পরিমাণ পিং সল্ট, পিং সল্ট না থাকলে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করতে পারেন।
- এরপরে চিনি কিংবা মধু মিশিয়ে ভালোভাবে ঘটে নিলেই হয়ে যাবে আপনার অ্যালোভেরার জুস।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন কি কি উপাদান দ্বারা অ্যালোভেরা তৈরি করতে হয় আপনারা
চেষ্টা করবেন যাতে করে বাসায় নিজেরা এলোভেরার জুস তৈরি করে নিতে পারেন "ধন্যবাদ"
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, উপরের যেগুলো টপিক নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো মেনে আপনারা যদি
এলোভেরা সেবন করতে পারেন তাহলে আশা করি উপকৃত হবেন এবং সুন্দর ভাবে জীবন যাপন
করতে পারবেন। তাই অবশ্যই খেয়াল রাখবেন নিয়ম মেনে এলোভেরা জুস সেবন করা নিয়ম
মেনে সেবন না করলে উপকারের বদলে ক্ষতি হতে পারে তাই উপরের দেওয়া টপিক অনুযায়ী
এলোভেরা সেবন করবেন।
আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে
অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌছে দিবেন ধন্যবাদ।
ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url