আজওয়া খেজুরের উপকারিতা হাদিস - আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম।

প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই জানেন খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে কিন্তু খেজুরে কি পরিমান ভিটামিন রয়েছে এটা কি জানেন? তাই খেজুরের উপকারিতা জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

আজওয়া খেজুরের উপকারিতা ও হাদিস

প্রত্যেকটা জিনিসেরই উপকারিতা এবং অপকারিতা রয়েছে তাই কি পরিমাণ খেজুর সেবন করলে আপনার উপকার হবে এটা হয়তো বা আপনি জানেন না? তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কি পরিমান খেজুর একটি স্বাভাবিক মানুষ খেতে পারে।
পোষ্ট সূচিপত্র.

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে খেজুর সম্পর্কে অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হয়, শুকনো খেজুর খেলে কি হয়, আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়, আজও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পর্কে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি খেজুর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
তাই কি পরিমাণ খেজুর খেলে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন এই বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে আপনি যদি নিয়মিত খেজুর খেয়ে থাকেন কিংবা খেজুর সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হয়

খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে বিশেষ সাহায্য করে থাকে। এর পাশাপাশি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খেজুরের উপকারিতা অপরিসীম।

খেজুরে কেমন ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায় তা নিম্ন তুলে ধরা হলোঃ
  • খেজুরে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে যা রক্তস্বল্পতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
  • খেজুরে প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকে, বাচ্চাদের দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে এছাড়াও হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
  • শুকনো খেজুরে প্রচুর পরিমাণ মিনারেলস রয়েছে যা আমাদের শরীরে মিনারেলের অভাব দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
  • খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে খেজুর।
  • খেজুরে প্রচুর পরিমাণ এন্টি এজিং প্রোপাইটিস থাকার ফলে যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ থেকে রক্ষা করে থাকে খেজুর। হাট কিংবা হৃদপিণ্ডকে সতেজ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে খেজুর।
খেজুরের অপকারিতা নিম্ন তুলে ধরা হলোঃ
  • যে সকল মানুষের ডায়াবেটিস রয়েছে সে সকল ব্যক্তি খেজুর খাওয়া উচিত নয়! কেননা খেজুর ব্লাডের গ্লোকোসের মাত্রা বাড়িয়ে থাকে। এ কারণে ডায়াবেটিসের রোগীর খেজুর খাওয়া উচিত নয়।
  • এবং কি যে সকল ব্যক্তির শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি রয়েছে সে সকল ব্যক্তি খেজুর খাওয়া উচিত নয়। কেননা খেজুরে পটাশিয়ামের মাত্রা অনেক রয়েছে যার ফলে আরো পটাশিয়াম বেড়ে যেতে পারে।
এগুলি হচ্ছে খেজুরের উপকারিতা এগুলো সমস্যা যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কেননা খেজুর খেলে আপনার আরও বেশি পরিমাণ পটাশিয়ামের মাত্রা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে তাই ডায়াবেটিসের রোগী এবং যে সকল ব্যক্তির পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি রয়েছে তারা খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

শুকনা খেজুর খেলে কি হয়

শুকনো খেজুর খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে তাই আপনারা শুকনো খেজুরের উপকারিতা জানতে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

শুকনো খেজুরের উপকারিতা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

  • শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হলো প্রতিটি খেজুরে রয়েছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • শুকনো খেজুর যে সকল ব্যক্তি রক্তস্বল্পতায় ভোগে থাকেন, তারা নিয়মিত প্রতিদিন শুকনো খেজুর খেতে পারেন এতে আপনার রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন।
  • শুকনো খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে যতটুকু আয়রন প্রয়োজন হয়। তার ১১ ভাগ পূরণ করে থাকে শুকনা খেজুর।
এছাড়াও শুকনা খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ, ক্যালসিয়াম, ও পটাশিয়াম ইত্যাদি ইত্যাদি। যা আমাদের শরীরের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান তাই আপনারা নিয়মিত শুকনা খেজুর খেতে পারেন আপনার শরীরের বহু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি সুস্থ সবল থাকতে পারবেন।

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

মদিনার আজওয়া খেজুর চেনার উপায় হল এটা বড় ধরনের খেজুর এবং কালো কচ চকে কালার হবে। এবং ডোরাকাটা দাগ দাগ হবে খেজুরের উপরের অংশ দেখেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে এটা অরিজিনাল আসল আজওয়া খেজুর। এবং কি মদিনার আজওয়া খেজুর টাটকা না অনেকদিন আগে কার।
তা বোঝার উপায় রয়েছে আপনি খেজুরটা ভেঙ্গে যদি ভিতরে সাদা আবরণ দেখেন তাহলে বুঝবেন খেজুরটা নতুন। এবং আপনি ভা ভাঙ্গার পর যদি দেখেন গুরো  গুরো ভাব এবং ঝুর ঝুরা হয়ে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন খেজুরটা অনেকদিন আগেকার এবং পুরাতন।

মদিনার আজওয়া খেজুর অনেক সুস্বাদুকর হয়ে থাকে। সেটা দেখলেও আপনি বুঝতে পারবেন এটা মদিনার আজওয়া খেজুর না অন্য খেজুর আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

সকল খেজুর খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা

একটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ দিনে কতটুকু পরিমাণ খেজুর সেবন করতে পারবেন সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই আপনি খেজুর কখন খাবেন কিভাবে খাবেন কতটুকু খাবেন তা জানতে নিচে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সাধারণত খেজুর অনেক ধরনের হয়ে থাকে একও খেজুরের এক ধরনের গুণ রয়েছে তাই আপনি কোন খেজুর সেবন করবেন বা কোন খেজুর খাওয়া উচিত তা কি জানেন তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন খেজুর খাওয়া উচিত।

খেজুর একটি শুকনো ফল যাকে ড্রাই ফুড বলা হয়ে থাকে। যার মধ্যে কমপ্লেক্স, কার্বোহাইড্রেট, খুব বেশি পরিমাণে রয়েছে। খেজুর আমাদের শরীরে এনার্জি দিতে সাহায্য করে থাকে। খেজুর প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন মিনারেল পাওয়া যায় যা আমাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
খেজুর আমাদের হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে এবং হারকে সতেজ এবং এতে থাকা ফ্লেভোনাইট ফেনালিট এসিড ও অন্যান্য অ্যাক্সিডেন্ট রয়েছে যা চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। ব্রেন ফাংশন ইমপ্রুভ করতে সাহায্য করে খেজুর। এবং কি ক্যান্সার ঘায়ের মত জটিল রোগ কেউ দমন করতে সাহায্য করে থাকে খেজুর।

আপনি দিনের মধ্যে সাধারণত যে কোন সময় খেজুর খেতে পারেন তবে দিনের মধ্যে তিনটি সময় রয়েছে যে সময় আপনি খেজুর সেবন করতে পারলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর সেবন করতে পারেন। এবং দুপুরের খাবার আগে সেবন করতে পারেন। এবং বিকাল ৪ঃ০০ টা থেকে ৫ঃ০০ টা মধ্যে

সেবন করতে পারেন। এ সময় খেজুর খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও খেজুর কে আপনি চিনির মতো ইউজ করতে পারেন খেজুর টুকরো টুকরো করে কেটে নিয়ে রোদে শুকিয়ে তারপরে ব্লেন্ডারের গুরু করে এ গুর আপনি চায়ের সঙ্গে মিক্স করে সেবন করতে পারেন।

তবে আপনি বাজার থেকে এই উপাদানটি কিনবেন না বাড়িতে এই উপাদানটি তৈরি করে নিতে পারলে ভালো হবে। আপনি প্রতিদিন আপনার ফিটনেস এর উপর নির্ভর করে খেজুর সেবন করতে পারেন এতে আপনার উপকার বেশি হবে।

আপনি যে খেজুর সংগ্রহ করবেন না বা কিনবেন না তা হল উপরে নরম বা চিটকা এ ধরনের খেজুর আপনি কিনবেন না কেন না এগুলো খেজুরে চিনি মধ্যে ডুবানো থাকে এগুলো খেলে আপনার উপকার হবে না তাই এগুলো খেজুর কিনা থেকে বিরত থাকুন।

আজওয়া খেজুরের উপকারিতা ও হাদিস

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কোন ব্যক্তি দিনে ৭ টি করে আজওয়া খেজুর খাবেন সে সকল ব্যক্তিকে সাপে কামড়ালেও কোন বিষে ধরবে না, এবং কি জাদু টোনা করলেও তাকে জাদু টোনা কাজ করবে না।

যদি আপনি প্রতিদিন ৭ টি করে আজওয়া খেজুর খেতে পারেন। তাহলে এগুলো বিপদ থেকে আপনি আল্লাহর ভরসায় মুক্ত থাকতে পারবেন। ইরানের একটি স্কোলার ছিলেন তিনি প্রতিদিন আজওয়া খেজুর খেতেন এবং তিনি পরীক্ষা করার জন্য বিষ পান করেছিলেন।

আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে তিনি আজও সুস্থ রয়েছেন তাই এটাই জলজ্যান্ত প্রমাণ হয় যে, প্রতিদিন কোন ব্যক্তি নিয়ম করে আজওয়া খেজুর সেবন করলে তাকে কোন বিষয়ে ধরবে না।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুর অত্যন্ত ক্যালরি বহুল খাবার যাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ এছাড়াও ভিটামিন A, এবং ভিটামিন K রয়েছে খেজুরের মধ্যে এবং মিনারেলস গুলির মধ্যে রয়েছে, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি। পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার খেজুর।

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি উল্লেখ করেছেন যে, আমাদের প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ গ্রাম আশ জাতীয় খাবার খাওয়ার কথা বলেছেন। যা আমরা খেজুর থেকে পেয়ে থাকি, সারাদিনের মধ্যে আপনি যদি একটি খেজুরও খেতে পারেন তাহলে আপনার চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করবে।
খেজুরেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সলিবল ফাইবার রয়েছে যা ন্যাচারাল লেকচারটিভ হিসেবে কাজ করে থাকে, আমাদের বাউয়েল সুরক্ষিত রাখার জন্য কাজ করে থাকে। খেজুরে এছাড়াও প্রচুর পরিমাণ মিনারেলস রয়েছে যেমন সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, পাওয়া যায় যার ফলে আমাদের হারের গঠন এবং মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে।

ওজন বাড়াতে খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম যেমন একটি খেজুরিতে রয়েছে ২৩ কিলো ক্যালরি এবং ১০০ গ্রাম খেজুরে পাওয়া যায় প্রায় ২৮২ কিলো ক্যালরি পাওয়া যায়। তাহলে বুঝতে পারছেন যে অল্প পরিমাণ খেজুর খেলেও আমরা যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরি সংগ্রহ করতে পারি।

আপনি যদি এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে আপনি ৫ থেকে ৭ টি খেজুর খেতে পারবেন। কিন্তু আপনি বসে থেকে যদি অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর সেবন করে থাকেন তাহলে আপনার ফ্যাট বেড়ে যাবে

এবং আপনি আস্তে আস্তে মোটা হয়ে যাবেন কারণ খেজুরের যে পরিমাণ ক্যালরি রয়েছে তাই একটি মানুষকে মোটা করার জন্য যথেষ্ট আশা করি বুঝতে পেরেছেন কি পরিমান খেজুর খাওয়া উচিত।

লেখক এর মন্তব্য

উপরের টপিকগুলো আপনারা মেনে যদি খেজুর সেবন করেন তবে আশা করি উপকৃত হবেন। তাই আমি বলব আপনারা উপরের টপিক ফলো করে খেজুর সেবন করার জন্য চেষ্টা করবেন কেননা খেজুরেতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে যা অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে আপনার ফ্যাট বেড়ে যেতে পারে তাই পরিমাণ মতো খেজুর সেবন করবেন ধন্যবাদ।
আমার এই আর্টিকেলটি পরে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধু বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌঁছে দিবেন ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
\