চুল পড়া বন্ধ করা - অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় সম্পর্কেসাধারণত শীতকালেই বেশির ভাগই চুল পড়ার মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। শুষ্ক হয়ে
যায় চুল, এবং খুশকি, এরকম নানা সমস্যা গুলো একদম মনে হয় পিছু ছাড়তে চায় না।
তবে চিন্তা নয় ! আপনারা জানেন কি এগুলো সমস্যার সমাধানের কিছু সহজ পদ্ধতি রয়েছে
তা কি আপনারা জানেন ? তাই আপনাদের জন্য তথ্য নিয়ে আসলাম অল্প বয়সে চুল পড়া
বন্ধ করা ও চুলের গোড়া শক্ত করার উপায় বা নিম্নে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তাই এই বিষয় জানতে নিম্নে খুব ভালো ভাবে পোরুন।
আপনার চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, খুশকি এবং চুল পড়ার মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
সমাধান করতে, আসুন জেনে নেওয়া যাক! চুল পড়া রোধ করার উপায়।
.
অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
আপনার চুলকে সুন্দর ও সতেজ রাখতে কেমিক্যাল বন্ধ করুনঃ চুলে নানা
ধরনের কেমিক্যাল বন্ধ করতে হবে। আপনার মাথায় সালফেট ও পেরাবিন মুক্ত শ্যাম্পু
ব্যবহার করুন। চুল পড়া রোধ করতে আই এল ব্রেজট বা কন্ডিশনার ব্রেজট শ্যাম্পু
ব্যবহার করুন। শীতের আবহাওয়ার সময় এই উপাদানটি ভালো কাজ করে।
শীতের ময়েশ্চারাইজারঃ শীতকালে এমন উপাদান ব্যবহার করুন, যার মধ্যে
ভালো উপাদান ময়েশ্চারাইজার রয়েছে। কেমিক্যাল যুক্ত যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট
ব্যবহার করা বন্ধ করুন। এ ধরনের রং ব্যবহারের ফলে চুলের ময়েশ্চারাইজার কমে যায়।
তাই আপনার উচিত পূর্বের প্রোডাক্টগুলো ত্যাগ করে পরিবর্তে হেনা ব্যবহার করুন।
চেষ্টা করে বাসায় মেহেদী পাতা বেটে নিয়ে হেনা প্যাকেজ বানিয়ে নিন।
আরো পড়ুন: শীতকালে অরিজিনাল খেজুরের গুড় চেনার উপায়
মাথায় গরম পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুনঃ মাথায় গরম পানি দেওয়া
যাবে না। স্বাভাবিক পানি ভালো, স্বাভাবিক পানি দিলে আপনার চুল ভালো থাকবে।
আপনার চুলে হিট দোয়া থেকে বিরত থাকুনঃ অনেক সময় চুলে স্টাইল করার
জন্য অনেকে হিট দিয়ে থাকে। আপনার এই অভ্যাস একেবারে পরিবর্তন করতে হবে। আপনারা
চুলে হিট দিলে আপনার চুল আরো শুষ্ক হয়ে যাবে। তাই গোসলের পর স্বাভাবিক
উপায়ে আপনার চুলকে শুকিয়ে নিন।
পুষ্টিকর খাবারঃ শীতের মৌসুমে ফল, ও শাকসবজি পুষ্টিকর খাবার বেশি
বেশি খান। খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে এবং আপনার চুলকেও
সুরক্ষিত রাখবে।
তেল দিয়ে চুলের ম্যাসাজঃ নারকেলের তেল, বাদাম তেল, এর
সঙ্গে মিশিয়ে নিন অলিভ অয়েল, মিক্স করে বানিয়ে নিন একটি তেল মিশ্রণ। এ মিশ্রণ
আপনার চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। পরের দিন গোসলের সময় শ্যাম্পু
দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। আপনার চুলের পরিবর্তন দেখে আপনি অবাক হবেন।
চুল পড়া বন্ধ ও চুলের গোড়া শক্ত করার উপায়
বর্তমান যুগ যতই আধুনিক হোক না কেন, তা চুল পড়া স্থায়ী সমাধান কখনো দিতে পারছে
না। বর্তমান সময়ে চুল পড়া নিত্য নতুন সমস্যা। নারী-পুরুষ সকলেই এই সমস্যার
সম্মুখীন হচ্ছে। চুল পড়া সর্বোচ্চ যে কারণে হলো দূষণ এবং অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন
করা। তাই হতাশ হওয়ার কারণ নেই। অনেক প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা ব্যবহার করে
চুলের গোড়া মজবুত করা যায়।
চুলকে সুরক্ষিত রাখার জন্য করনীয়ঃ আপনার চুলকে আচড়ানোর জন্য
দাঁতযুক্ত চিরুনি ব্যবহার করুন। রোদে যাওয়ার পূর্বে চেষ্টা করুন মাথা ঢেকে
নেওয়ার জন্য। আপনার চুলের যদি আগা ফেটে থাকে, তাহলে আপনার চুল পড়ার কারণ হতে
পারে। চুল পড়া রোধ করতে নিয়মিত কয়েক মাস পর পরে চুলের আগা কেটে দিন। এবং আপনার
চুল ভেজা থাকলে ওই মুহূর্তে চুল আচড়াবেন না।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুনঃ আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব থাকলে
চুল পড়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব যদি থেকে থাকে। তবে অভিজ্ঞ
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার সেবন করুন। আপনার চুলকে মজবুত রাখার
জন্য প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি সেবন করুন যেমন শাক-সবজি এবং রঙিন ফলমূল রাখুন আপনার
খাবারের তালিকাই।
যেমনঃ
- মিষ্টি কুমড়া
- টমেটো
- গাজ
- দুধ
- ডিম
- এবং বাদাম জাতীয় খাবার
এ জাতীয় খাবার খেলে আপনার চুলের গোড়া মজবুত ও শক্ত হবে।
অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ
চুল ত্বকের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ একটি অংশ। মাথা থেকে চুল অতিরিক্ত হারে ঝরে
যাচ্ছে বা চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে, এমন লোকের সংখ্যা অনেক রয়েছে। প্রতিদিন ৮০
থেকে ১০০ টির বেশি চুল পড়লে মাথা টাক হয়ে থাকে। চুল বিশেষজ্ঞরা চুল পড়ার
বিশেষ কারণের কথা বলেছে।
চুল পড়ার কারণঃ সাধারণত চুল পড়ার বিশেষ কারণ হলো মানসিক অশান্তি,
দূশচীন্ত, অপুষ্টি বা পুষ্টির অভাব, এক কথাই ডায়েট বা ইত্যাদি বলে। এবং
এছাড়াও জ্বর, লিভার, ও কিডনির, অসুখ। এই ধরনের অসুখ রক্তস্বল্পতা, কিছু
ঔষধ, যেমন ইনডোমেথাসিন, ও জেন্টামাইসিন, ইত্যাদির। কারণে চুল
অতিরিক্ত মাত্রায় পড়ে যেতে পারে।
চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন
আপনার চুলকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যেগুলো ভিটামিন থাকা প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি আপনার চুলকে গজাতে চুলের ফলিকল কে মজবুত করে তুলে। এবং চুল পড়া
কমাতে সাহায্য করে থাকে ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে ভিটামিন ডি। তাই
অবশ্যই ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে হবে। তবেই ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হবে।
যেগুলো খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়ঃ
- ডিমের কুসুম
- সামুদ্রিক মাছ
- ও মাশরুম ইত্যাদি
এই খাবার গুলো নিয়মিত সেবন করলে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হবে। এবং আপনার চুল
পড়া অনেকাংশেই কমে যাবে।
চুলের গোড়া শক্ত করার উপায়
আপনারা চুলের গোরা শক্ত করতে চাইলে নারকেলের তেলের সঙ্গে মেথি মিক্স করে লাগাতে
পারেন। কারণ মেথি চুলের গোড়াকে শক্ত এবং মজবুত করে। এছাড়াও আমলকির রস ব্যবহার
করতে পারেন কারণ আমলকি চুলের গোড়াকে শক্ত করে পাশাপাশি চুল কালো কচ কোছে
করে। আপনারা চাইলে কালো জিরে চিবিয়ে খেতে পারেন। কারণ কালোজিরা অনেক গুনাগুন
রয়েছে।
এছাড়াও আরো কয়েকটি উপাদান ব্যবহার করতে পারেন যেমনঃ
- নারিকেল তেল
- জলপাইয়ের তেল
- কাঠ বাদামের তেল
এছাড়াও ভিটামিন ই জাতীয় খাবার খাবেন বা ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাবেন, আপনার
চুলের পরিমাণ অনুযায়ী। অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
ব্যবহারের পদ্ধতিঃ সপ্তাহে দুই থেকে তিন বেলা ঘুমানোর পূর্বে চুলে
ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন। পরের দিন ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন। এই নিয়ম অনুযায়ী
কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার চুলের গোড়া শক্ত হবে পাশাপাশি আপনার
চুল পড়াও বন্ধ হয়ে যাবে।
এর সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু নিয়ম মেনে চলবেন যেমনঃ প্রচুর পরিমাণ
পানি পান করার চেষ্টা করবেন, পুষ্টিকর শাকসবজি খাবেন, নিয়ম অনুযায়ী ঘুমা বেন,
এবং মানসিক চাপ মুক্ত থাকবেন, আপনার চুলে যত্ন নিবেন যাতে আপনার চুলে ময়লা জমে
না যায়।
চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়
হঠাৎ কোনো না কোনো সময় চুল পড়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের প্রায়
সকলের। চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে যেমন খাদ্যঅভ্যাস অতিরিক্ত মাত্রায়
টেনশন ইত্যাদি। কিন্তু এই সমস্যাটা কিছু মানুষের বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হতে
হয়। এবং চুল পড়তে পড়তে মাথা খালি বা টাক হয়ে যায়।
এ সমস্যা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা আপনার চুল পড়া
কমাতে এবং চুল বৃদ্ধি করতে বিশেষ কার্যকারিতা বাড়ায়। জানুন তাহলে আপনার মাথা
টাক পড়া থেকে কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে টাক পড়ার মত সমস্যা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত
রাখবেন।
নারকেলের তেলঃ নারকেলের তেল আপনার স্কাল্পের মাইক্রোবায়োটা বৃদ্ধি
করে। যার কারনে মাথা চুলের ফলাফল ও মাথার ত্বকের চুলের গোড়া শক্তিশালী করে।
নারকেলের তেলে অতি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি যা চুলের গোড়ায় প্রবেশ করে চুল পড়া
বন্ধ করে। সপ্তাহের দুই থেকে তিন বার আপনার মাথায় নারকেল তেল দিয়ে মাছাজ করুন
গোসলের আগ পর্যন্ত রেখে দিন।
আমলকিঃ আমলকিতে রয়েছে বিশেষ প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড, যা আপনার
চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং আমলকির ভিটামিন সি
চুলের আকার স্থায়ীভাবে রোধ করে।
পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজের রস রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, ফলে চুল
গজাতে বেশ উপকারী হয়ে ওঠে। পেঁয়াজের রসে রসে এলোপেসিয়া ও এরিয়াটা নামক
রোগের জন্য বিশেষ কার্যকারী। এই রোগের আক্রমণে মাথার চুল পড়তে শুরু করে। তাই
মাথায় শ্যাম্পু করার ২০ মিনিট পূর্বে পেঁয়াজের রস চুলে লাগিয়ে নিন।
লেবুঃ চুলের জন্য লেবু খুবই উপকারী বলে বিবেচিত করা হয়েছে। লেবু
চুলকে খুব দ্রুত গজাতে সাহায্য করে। সরাসরি লেবুর রস চুলে লাগানো ঠিক নয়, তাই
তেলের সঙ্গে মিক্স করে চুলে ব্যবহার করুন।
ডিমঃ ডিম চুলের জন্য খুবই উপকারী বলে বিবেচিত করা হয়। কারণ ডিমে
৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কেরাটিন ও প্রোটিন রয়েছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত ও শুষ্ক চুল নরম
করতে সাহায্য করে থাকে। একটি ডিম এক টেবিল দই কিংবা ২ টি ডিম ও দুই টেবিল চামচ
দই মিশে নিন। এবং আপনার চুলে ধোবার ৩০ মিনিট পূর্বে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন।
ম্যাসাজঃ আপনার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন
বাড়বে, যা আপনার চুল পড়া কমাতে সাহায্য করবে। ম্যাসাজ এর পাশাপাশি একটি ভালো
হেয়ারঅয়েল ব্যবহার করে মাসাজ করা গুরুত্বপূর্ণ । যা আপনার চুলকে গজা দিয়ে
সাহায্য করবে।
লেখকের মন্তব্য
যেগুলো উপায়ে আপনাদের চুল পড়া রোধ করতে পারবেন এর বেশিরভাগই ঘরোয়া উপায়। যা
আপনারা নিজে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারবেন। এবং চুল পড়া রোধ করতে পারবেন। তাই
আপনাদের এটুকুই বলবো যে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন না করে।
এই আর্টিকেলে যেগুলো নিয়ম অনুযায়ী সেবন বা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে সে
অনুযায়ী ব্যবহার বা সেবন করলে আপনার চুল পড়া অবশ্যই রোদ হবে। তাই এই
আর্টিকেলে যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সে সকল বিষয় মেনে চললেই
অবশ্যই উপকৃত হবেন বলে আশা করি।
আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে
অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌঁছে
দিবেন ধন্যবাদ।
ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url