পেয়ারা গাছের রোগ ও প্রতিকার - পেয়ারার উপকারিতা - পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্য।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন পোস্ট রয়েছে ক্লিক করুনপ্রিয় পাঠক, পিয়ারা গাছে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে এ রোগ থেকে আপনি আপনার
পেয়ারা গাছকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখবেন তা জানতে এই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃআপনার পেয়ারা গাছকে রোগমুক্ত রাখতে পারলে আপনার পেয়ারা
গাছে অতিরিক্ত মাত্রায় ফল পাবেন। তাই পেয়ারা গাছের রোগ মুক্ত রাখা অতি
গুরুত্বপূর্ণ তাই কিভাবে আপনি পেয়ারা গাছের রোগ মুক্ত রাখবেন এ সম্পর্কে এই
আর্টিকেলে পুরো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই পেয়ারা গাছের রোগ
সম্পর্কে জানতে এবং কি রোগমুক্ত করার উপায় জানতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, পেয়ারা গাছের রোগ সম্পর্কে প্রায় সকলেই কম বেশি জানেন কিন্তু
পেয়ারা গাছে রোগমুক্ত কিভাবে করতে হয় এটা আপনার অনেকেই জানেন না? তাই চলুন জেনে
নেওয়া যাক পেয়ারা গাছের রোগ সম্পর্কে, এবং পেয়ারা গাছের রোগ মুক্ত করার সঠিক
উপায় এবং পেয়ারা গাছে ফুল আসার সময় এ সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে এই পুরো
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পেয়ারা গাছের রোগ ও প্রতিকার
প্রিয় পাঠক পেয়ারা গাছ প্রচুর পরিমাণ মাটি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে খাদ্য সংগ্রহ
করতে যদি পেয়ারা গাছ কমতি হয়ে থাকে তাহলে গাছটি আস্তে আস্তে দুর্বল হতে থাকে।
এছাড়াও গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির অভাব হলে গাছটি এরে যেতে পারে বা দুর্বল হতে
পারে। আবার অন্যদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গাছের গোড়ায় থাকলে গাছটি শিকড় পসন
ধরে গাছটি এরে যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ পাকা কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
সে ক্ষেত্রে বোঝা যায় পেয়ারা গাছের পর্যাপ্ত পরিমাণ ফল পাওয়া যাবে একমাত্র
জমিতে কেননা জমি ছাড়া আপনি যদি টবে কিংবা সাদে আপনি পেয়ারা গাছ লাগালে পেয়ারা
গাছটিতে পানির অভাব কিংবা খাদ্যের অভাব থাকবে এ কারণে জমিতে পেয়ারা চাষ করলে
অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব।
আর আপনি যদি পেয়ারা চাষ ছাদে করতে চান তাহলে অবশ্যই বড় টবে আপনার পেয়ারা গাছটি
লাগাতে হবে এবং সঠিক পরিচর্যা করতে হবে! তবেই আপনি পেয়ারা গাছে অধিক ফল পাবেন।
পেয়ারা গাছের রোগ ও প্রতিকার নিম্নে দেওয়া হলোঃ
রোগঃ পেয়ারা গাছের মরিচা রোগ যা পাতা থেকে হয়। যেমন পাতা মরে যায়
এবং আস্তে আস্তে পাতা ধার থেকে মরতে মরতে পুরো গাছের পাতায় ঝরে যায়।
প্রতিকারঃ যেগুলো আক্রান্ত বা মরে যাওয়ার ডালগুলি রয়েছে সেগুলোকে কেটে
ফেলে দিতে হবে। এবং ঔষধ ছিটাতে হবে যেহেতু ছত্রাক রোগ সেহেতু
কুপ্রভিট ব্যবহার করতে হবে। ১ লিটার পানিতে ২ ইমেল ঔষধ
সন্ধ্যার আগে গাছে ছিটিয়ে দিতে হবে। সপ্তাহে এক বার কিংবা
দুই সপ্তাহ পর পর দিতে পারেন এতে করে আপনার গাছের পাতা কুঁকড়ে যাওয়ার
সমস্যা সেরে যাবে।
রোগঃ গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত মাত্রায় পানি থাকলে গাছের পাতা হলুদ হতে
পারে কিংবা গাছের ধরতে ঘাড়তি হতে পারে নেআইট্রোজেন বা সালফারের ঘাড়তি হতে পারে।
প্রতিকারঃ অতিরিক্ত মাত্রায় গাছের গোড়ায় পানি জমে গেলে গাছের পাতা হলুদ
হতে পারে এবং নাইট্রোজেনের পরিমাণ কম থাকলে পাতা গোড়া থেকে হলুদ হয়ে যেতে পারে।
এবং পাতার মাথায় থেকে যদি পাতা মোরে তাহলে বুঝবেন মাটিতে সালফারের অভাব রয়েছে।
রোগঃ পিয়ারা আসলেই মুকুল থেকে পিয়ারা ছোট একটি দানা হলেই এই সময়
পেয়ারা ঝরে যায়।
প্রতিকারঃ পেয়ারা পরে সাধারণত যে সমস্যায় তাহলো নিউট্রিনেণীয়াছের
ডেভিডেন্সি কারণেও হতে পারে এছাড়াও গাছের গোড়ায় পানি থেকে থাকলে ঝরে যেতে
পারে।
পেয়ারা গাছের পরিচর্যা
রোপন পদ্ধতিঃ পেয়ারা গাছ থেকে অধিক ফল পেতে আপনাকে অবশ্যই পেয়ারা গাছের
আড়াই থেকে তিন ফুট দূরত্ব হতে হবে। এবং প্রতি বিঘায় ৪৫০ থেকে ৫০০ টি গাছ লাগাতে
হবে। এবং মাটি সুন্দর জৈব সার তৈরি করে নিতে হবে যেমন পাউস এর সঙ্গে ডি এ পি সার
মিশ্রণ করে প্রয়োগ করতে হবে।
বাগান পরিচর্যাঃ বসন্ত কাল থেকে শুরু করে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত বাগানে পানি
দেওয়া বন্ধ করুন। জৈষ্ঠ মাসের ভীষণ রোধের ফলে এ সময় প্রাণী প্রয়োগ করুন।
আপনারা জানেন যে খোঁড়াও সময় ফুল ও ফল হয় না
এবং কি বর্ষার আগে এই সময় আপনি বাকিয়ে মাটির সঙ্গে বেঁধে দিন। এ সময় তো আপনি
খাড়া ডাল গুলি বাকিয়ে ঘোড়ার সঙ্গে বেঁধে দিতে পারেন। এর ফলে আপনার পেয়ারা
গাছে অধিক পরিমাণ নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি করা সম্ভব মানে কুশি বের হয় যার ফলে প্রচুর
ফুল আসতে সক্ষম হয়। এ পদ্ধতিতে বছরে দুই বার ফসল পাওয়া সম্ভব।
পেয়ারা পাতার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক পেয়ারা পাতার বিশেষ উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা হয়তো বা অনেকেই
জানেন না তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক পেয়ারা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে পেয়ারা পাতার উপকারিতাঃ পেয়ারা পাতায় রয়েছে
শক্তিশালী আন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুন রয়েছে যা ডায়রিয়ার জন্য দায়ী
ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
ওজন কমাতে পেয়ারার পাতার উপকারিতাঃ পেয়ারা পাতা ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা
পালন করে। পেয়ারা পাতায় থাকা উপাদানটি কমপ্লেক্স স্ট্যাচকে চিনিতে রূপান্তরিত
হওয়া থেকে বিরত রাখে। যার ফলে শরীরে ফ্যাট বৃদ্ধি হতে পারে না এবং ওজন কমতে শুরু
করে।
ডায়াবেটিস কমাতে পেয়ারা পাতার উপকারিতাঃ পেয়ারা পাতা ডায়াবেটিসের
রোগীর রক্তের গ্লূকোজ কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরে সুক্রোজ ও মল্টেজ এর শোষণ
কমিয়ে রক্তের গ্লূকোজের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
দাঁতের ব্যথা কমাতে পেয়ারা পাতার উপকারিতাঃ পেয়ারা পাতায় প্রতিরোধকারী
গুণ থাকার কারণে এ উপাদানটি দাঁতের ব্যথা ও দূর করে এবং ঘাও প্রতিরোধ করে।
হজম শক্তি বাড়াতে পেয়ারা পাতার উপকারিতাঃ পেয়ারা পাতায় রয়েছে
ডাইজেস্টিভ এনজাইমের প্রোডাকশন বাড়িয়ে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পেয়ারা পাতার উপকারিতাঃ এটা প্রমাণিত হয় যে
পেয়ারা পাতা থেকে পাওয়া গ্যাস্ট্রিক ও ক্যান্সারের মতো ভয়ংকর ক্যান্সারের
ঝুঁকি কমাতে পারে।
কলেরা প্রতিরোধ করতে পেয়ারা পাতার উপকারিতাঃ পেয়ারা পাতায় রয়েছে
শক্তিশালী অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল যার ফলে কলেরা চিকিৎসায় কার্যকরী।
এছাড়াও পেয়ারা পাতার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে যা মানুষের জন্য অতি
গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান তাই আপনারা পেয়ারা পাতা নিয়ম মেনে সেবন করতে পারলে
অবশ্যই এগুলো রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
পেয়ারার উপকারিতা
পেয়ারায় প্রচুর উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা অনেকেই হয়তোবা জানেন না? পেয়ারা
খেতে পছন্দ করেনা এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। দেশি ফল হিসেবে এ ফলটি অনেক কেনাবেচা
হয় এবং অনেকেই পেয়ারা খেতে পছন্দ করে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পেয়ারার
উপকারিতা সম্পর্কে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ক্ষেত্রে পেয়ারার উপকারিতা নিম্নে দেওয়া হলোঃ
- পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
- যেকোনো ধরনের ভয়ংকর ইনফেকশন থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। এছাড়াও রয়েছে পেয়ারাতে লাইকোপেন, কোয়ারকোটিন, ভিটামিন সি ও পলিফেনল আছে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে প্রোস্টেট ক্যান্সার কমাতে বেশি সাহায্য করে থাকে পেয়ারা এবং কি ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে পেয়ারা।
- পেয়ারা ফাইবার ও কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার ফলে পেয়ারা খেলে সক্রার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ফলে ডায়াবেটিসের হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশে কমে যায়।
- পেয়ারা অতি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, পেয়ারা শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ব্যালান্স বাড়ায় যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- হাট এর সমস্যা কমাতে পেয়ারা বেশ কার্যকারি, ট্রাইগ্লিসারাইড ও এলডি এল নামক খারাপ কোলেস্টোরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্টের বিভিন্ন সমস্যা অনেক কমে যায়। পেয়ারা এইচ ডিএল নামক কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়ায় যা হাটকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পেয়ারা বেশ উপকারী, পেয়ারা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় যাদের পায়খানা ক্লিয়ার হয় না তারা পেয়ারা খেলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্য
প্রিয় পাঠক পেয়ারা গাছের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দেখে আপনারা পেয়ারা
চাড়া কিনলে কখনোই ঠকবেন না। যে কয়েকটি বিষয় দেখে পেয়ারা গাছের চারা কিনবেন তা
নিম্নে দেওয়া হলোঃ
প্রথমত আপনারা যে চারা ঠিক কিনবেন সে চারাটি স্থায়ী পেয়ারা নাকি জেনে নিবেন,
কেননা স্থায়ী পেয়ারা বছরে বারোমাসি হয়ে থাকে। পেয়ারা গাছ কিনার সময় আপনি
অবশ্যই খেয়াল করবেন পেয়ারা গাছটি আটির গাছ না কলমের গাছ।
আটির গাছ হলে পেয়ারা ধরতে বহু সময় লেগে থাকে আর কলমের গাছ বা চারা হলে গাছ ধরা
মাত্রই পেয়ারা গাছে ফুল আসবে এবং তাড়াতাড়ি ফল হবে এ জিনিসটা আপনার অবশ্যই
খেয়াল রাখবেন চারা কেনার সময়।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
পেয়ারা গাছে বৈশিষ্ট্য হলো এ গাছটি কাটা বিহীন একটি গাছ যার পাতা তেলতেলে হয় এই
গাছটির উচ্চতা ১০ ফুট থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে যেগুলো অরজিনাল স্থায়ী
পেয়ারা। এবং যেগুলো আঁটির পেয়ারা গাছ সেগুলো ১৫ থেকে ২০ ফুট
উচ্চতা হয়ে থাকে কলমের গাছের তুলনায় আটির গাছে অনেক ফল কম হয়। এবং কলমের গাছে
পর্যাপ্ত পরিমাণ ফল হয় যা বারোমাসি হয়ে থাকে এটাই হলো পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্য।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক উপরের যেগুলো টপিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো আপনারা যদি
সঠিকভাবে মেনে কাজ করতে পারেন তাহলে আশা করি উপকৃত হবেন তাই এটাই বলব উপরের
টপিকগুলো মেনে চললে অবশ্যই সাকসেস হতে পারবেন।
আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে
অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌছে দিবেন ধন্যবাদ।
ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url