জান্নাতের গাছের নাম - একবার সুবহানাল্লাহ বলার ফজিলত - আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত
প্রিয় পাঠক, আপনারা জানেন কি এমন কিছু আমল রয়েছে যে আমল করলে আপনি জান্নাতে গাছ
লাগাতে পারবেন? অনেকেই হয়তোবা জানেন না। তাই জান্নাতে গাছ লাগানোর আমল সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ছোট্ট একটি দোয়া যে দোয়া আপনি আমল করলে যত ইচ্ছা জান্নাতে খেজুর গাছ তৈরি করে
নিতে পারেন। তাই জান্নাতে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি যত ইচ্ছা আপনে
জান্নাতে গাছ তৈরি করে নিতে পারে, ছোট্ট একটি আমলের মাধ্যমে। তাই জান্নাতে গাছ
লাগানোর দোয়া জানতে এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ.
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, আমরা অবসর সময় যেই সেই ভাবে সময় নষ্ট করে ফেলি। কিন্তু ছোট্ট একটি
দোয়ার মাধ্যমে আপনি জান্নাতে যত ইচ্ছা খেজুর গাছ রোপন করে নিতে পারেন। এটি কি
আপনারা জানেন? যদি জেনে না থাকেন তবে এই আর্টিকেল থেকে জান্নাতে গাছ লাগানোর
দোয়া সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। এই আর্টিকেলে যেগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা
হয়েছে তা হল,
গাছ লাগানোর দোয়া, জান্নাতের গাছের নাম, একবার সুবহানাল্লাহ বলার
ফজিলত,সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি ও আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত। এই সকল বিষয়
নিয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে তাই জান্নাতে গাছ তৈরি করার
দোয়ার সমূহ জানতে এই আর্টিকেল স্টেপ বাই স্টেপ মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
গাছ লাগানোর দোয়া
প্রিয় পাঠক, জান্নাতী মমিন মোমিনাতের জন্য চিরস্থায়ী অনন্ত সুখের ঠিকানা হলো
জান্নাত। যারা একবার জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা কখনোই আর জান্নাত থেকে বের হবে
না। তাদের জীবন ও সুখ প্রশান্তি কখনোই আর ফুরাবে না। তাই দুনিয়ায় থাকা অবস্থায়
জান্নাতে যে যত সুন্দর্য করে নিতে পারে সে তত জান্নাতে সুখে শান্তিতে বা
সমৃদ্ধিতে থাকবে চিরস্থায়ী ভাবে।
আমরা পৃথিবীতে যেভাবে আমরা নিজের অবস্থান নিজের মতো করে যেভাবে চাই, ঠিক জান্নাতে
ওই রকম অবস্থান করে নিতে দুনিয়ায় আমাদের কিছু আমল রয়েছে যে আমলের বিনিময়ে এই
দুনিয়া থেকেই আমরা জান্নাতের সৌন্দর্য তৈরি করে নিতে পারি। আল্লাহ তা'আলা,
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে আমাদের সেই
সুযোগ করে দিয়েছেন।
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি
সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি পড়বে, সে ব্যক্তির জন্য জান্নাতে একটি খেজুর
গাছ লাগানো হবে।
জান্নাতের গাছের নাম
প্রিয় পাঠক, জান্নাত এমন একটি শান্তিময় জায়গা যেখানে আল্লাহ তা'আলা আমাদের
খুশী এবং আনন্দের জন্য এমন কিছু নেই যেটার মাধ্যমে আমরা জান্নাতে অপূর্ণতা পাব।
আল্লাহ তা'আলা আমাদের জন্য জান্নাতে উত্তম স্থান রেখেছেন।
- সূরা আর রহমান এর ৬৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমাদের জন্য জান্নাতে রয়েছে ফলমূল, খেজুর ও আনার। সুতরাং তোমাদের রবের কোন নেয়ামতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে। নিশ্চয়ই মমিন ব্যক্তিদের জন্য সফলতা। সুশোভিতো উদ্যান সমূহ ও বিভিন্ন রকমের আঙ্গুরসমূহ। (সূরা নাবা, আয়াত নং ৩২)
- আল ওয়াকিয়াহ আল্লাহ তা'আলা বলছেন, আর ডান দিকের দল; কতই না ভাগ্যবান ডান দিকের দল! তারা থাকবে কাটাবিহীন কুলগাছের নিচে, আর কাঁদিপূর্ণ কলা গাছের নিচে, আর বিস্তৃত ছায়ায়, আর সাদা প্রবাহিত পানির পাশে, আর প্রচুর ফলমূলে, যা শেষ হবে না এবং নিষিদ্ধও হবে না। (তারা থাকবে) সুউচ্চ শয্যাসমূহ; নিশ্চয়ই আমি হুরদেরকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করব। অতঃপর তাদেরকে বানাবো কুমারী, সোহাগিনী ও সমবয়সী। ডান দিকের লোকের জন্য। (আয়াত নং ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮)
- জান্নাতের ফলসমূহ এত সবুজ হবে যে, তাদের রং সবুজ কালো মিশ্রিত হবে। জান্নাতের গাছ সমূহ সর্বদা শয্যাসমূহ থাকবে। (সূরা আর রহমান এর ৬৪ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, ঘন সবুজ এই বাগান দুটি সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমরা প্রতিপালকের কোন কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে।
- জান্নাতের গাছগুলোর শাখা সমূহ শয্যাসমূহ লম্বা ও ঘন হবে। উভয়টি বহু শাখা পল্লব বিশিষ্ট ভিক্ষেপপূর্ণ সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমার প্রভুর কোন কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে। (সূরা আর রহমান আয়াত নং ৪৮)
- জান্নাতের একটি গাছের ছায়া এত লম্বা হবে যে, কোন আরোহী উঠে করে গেলে একাধারে শত হাজার বছর চলার পরেও ওই ছায়া শেষ হবে না। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ইরশাদ করেছেন যে, জান্নাতে একটি গাছ রয়েছে তার ছায়ায় অশ্বারোহী শত বছর চলার পরেও শেষ প্রান্তে পৌছাতে পারবেনা। যদি এ ছায়া চাও তবে পাঠ করো আর রহমানের আয়াত।
একবার সুবহানাল্লাহ বলার ফজিলত
সুবহানাল্লাহ বলার এত ফজিলত যা ভাষায় কল্পনা করার মত নয়! আল্লাহ তাআলা
সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম। এ দোয়া করা মাত্রই আল্লাহ
তা'আলা এত এত খুশি হন যে নেকিতে ভরপুর করে দেন এবং দাড়ি পাল্লা ভর্তি করে
আমল নেন নেন যতই খুশি নেন। তাহলে আল্লাহ তা'আলা সুবহান আল্লাহ বললে তো খুশি হয়নি
আর যদি বলা যায় সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম।
আরো পড়ুনঃ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা
বললেই আল্লাহ এত এত খুশি হন যে চাওয়া মাত্রই আল্লাহ তা'আলা তাকে দেবেন যা
চাবেন তাই পাবেন। আল্লাহ তা'আলা যদি আমাদের খুশি হয়ে কিছু দেন তাহলে বুঝতে
পারছেন কত বড় বরকতময় আমাদের জন্য প্রতিনিয়ত সুবহান আল্লাহ আল্লাহর প্রশংসা
করবেন আল্লাহর প্রশংসা করলে আল্লাহ অনেক খুশি হন যার বিনিময়ে আমরা যা চাইবো তাই
আল্লাহ আমাদের দিবেন।
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম এই দোয়াটি অনেক হালকা কিন্তু
এর ফজিলত ওহুদ পাহাড়ের চাইতেও বড়! তার চেয়েও বড় যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব
নয় কেননা আল্লাহ তা'আলা তার প্রশংসা করলে তিনি এত খুশি হন যে বান্দা যা চান
আল্লাহ তা'য়ালা তৎক্ষণাৎ তার আশা পূরণ করে দেন সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
সুবহানাল্লাহিল আযীম।
এ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা করলে আল্লাহ তা'আলা নেকিতে ভরপুর করে দেন। তাই
প্রতিনিয়ত সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম পাঠ করতে থাকুন যার
ফলে আপনার নেকি অনেক বৃদ্ধি হবে এবং খুশি হয়ে আল্লাহ তা'আলা আপনাকে আমাকে সকলকে
আল্লাহ তা'য়ালা জান্নাত দান করবেন আমিন।
আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত
আলহামদুলিল্লাহ যার অর্থ সকল প্রশংসা আল্লাহর। খুশির কোন সংবাদ বা ভাল কোন সংবাদ
শুনলেই আলহামদুলিল্লাহ বলা সুন্নত। আলহামদুলিল্লাহ প্রশংসা সূচক বাক্য। এই বাক্য
আল্লাহর উদ্দেশ্যে বললে আল্লাহ তা'আলা এত খুশি হন যে বান্দার সমস্ত পাপ আল্লাহ
তা'আলা ক্ষমা করে দেন। আল্লাহর প্রশংসা করলে আল্লাহ তা'আলা অনেক খুশি হন। আর
আল্লাহ যদি খুশি হন কোন বান্দার উপরে তাহলে ওই বান্দার জীবন একেবারেই ধন্য হয়ে
যায়। এবং কি আল্লাহতালা তাকে উত্তম ব্যক্তিদের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করে দেন।
রাসূল (সাঃ) আলহামদুলিল্লাহ বলার অসংখ্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন।
হাদিসে এসেছেন যে, আল্লাহ তাআলার মহত্ব বর্ণনা ও প্রশংসা বর্ণনা করার জন্য
আলহামদুলিল্লাহ থেকে উত্তম ভাগ্য আর নেই। অন্যথায় হাদিসে এসেছেন যে, আল্লাহ
তা'আলা সব থেকে বেশি নিজের প্রশংসা পছন্দ করেন, এজন্য আল্লাহ তা'য়ালা তার
প্রশংসার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন (সহীহ বুখারী)
রাসুল (সাঃ) বলেন যে, সর্বোত্তম ফজিলতপূর্ণ বাক্য হল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং
সর্বোত্তম দোয়া আলহামদুলিল্লাহ (তিরমিজি) এবং আরও বলেন আলহামদুলিল্লাহ বলায়
আমলের পাল্লা আল্লাহ তা'আলা ভারী করে দেন এবং পূর্ণ করে দেন। এবং সুবহানাল্লাহ ও
আলহামদুলিল্লাহ এই শব্দ দুটি আসমান-জমিনের খালি জায়গা পূরণ করে দেন। (মুসলিম)
আরো পড়ুনঃ মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা
তাহলে আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত কি এবং আল্লাহ
তা'আলা আলহামদুলিল্লাহ বলাই কতটা খুশি হন। তাই প্রতিনিয়ত আল্লাহ তা'আলার
প্রশংসা করুন এতে করে আপনার আমলনামা অনেক বেশি হবে এবং আল্লাহ তা'আলা আপনার
আমলনামা পূর্ণ করে দিবেন, তাই প্রতিনিয়ত এগুলো আমল করুন।
পোস্ট ট্যাগ
গাছ লাগানোর দোয়া,জান্নাতের গাছের নাম,একবার সুবহানাল্লাহ বলার ফজিলত,গাছ লাগানো
নিয়ে হাদিস,গাছ লাগানোর পদ্ধতি,সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি,আলহামদুলিল্লাহ
বলার ফজিলত।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেল থেকে জান্নাতে গাছ লাগানোর আমল এবং কি আল্লাহকে
সন্তুষ্ট করার আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছে। এই
আর্টিকেলে যেগুলো আমলের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে ওগুলো আমল আপনি যদি প্রতিনিয়ত
করতে থাকেন তাহলে আল্লাহ তা'আলা আপনাকে খুশি হয়ে আপনার আমলনামা নেকীতে ভরপুর করে
দিবেন এবং আপনাকে জান্নাত দান করবেন। তাই এই আর্টিকেলে যেগুলো আমলের বিষয়ে
উল্লেখ করা হয়েছে ওগুলো আমল প্রতিনিয়ত করুন।
আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে
অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবদের কাছে এবং কি প্রত্যেকটি মুসলিম ভাই বোনদের কাছে
শেয়ার দিয়ে পৌছে দিবেন। যাতে করে জান্নাতে যাওয়ার আমল সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পারে। এত দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ।
ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url