ইসলামিক বিয়ে পড়ানোর নিয়ম - সুন্নতি বিয়ের নিয়ম - মোবাইলে বিয়েকরার নিয়ম

আল্লাহ তা'আলার বিশেষ নেয়ামত যে আমাদের বিবাহর হুকুম দিয়েছেন। এবং সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হল বিবাহ। আর এই সুন্নতি বিবাহর মাধ্যমেই একটি আদর্শ পরিবার গঠন হয়। তাই সুন্নতি বিবাহ করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা? তাই এই আর্টিকেলে সুন্নাতি বিবাহ সম্পন্ন করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনারা রাসুল সাঃ এর সঠিক সুন্নাত মেনে বিবাহ সম্পন্ন করতে চাইলে এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ইসলামিক বিয়ে পড়ানোর নিয়ম - সুন্নতি বিয়ের নিয়ম - মোবাইলে বিয়েকরার নিয়ম

আল্লাহ তা'আলা বিবাহর মাধ্যমে মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ ও মানসিক প্রশান্তি লাভের উপায় দিয়ে দিয়েছেন। তাই বিবাহ ইসলামের শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান বিবাহ। তাই এই বিবাহ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করার জন্য যেগুলো নিয়ম রয়েছে তা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই আপনারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন করতে চাইলে এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ.

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেল থেকে আপনারা রাসুল সাঃ এর সুন্নাত অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন, তাই আপনি যদি সঠিকভাবে বিবাহ সম্পন্ন করতে চান? তাহলে এই আর্টিকেল আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে যেগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা হলো,ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের নিয়ম PDF, বিয়ে নিয়ে ইসলামিক উক্তি, 
বিয়ে নিয়ে কোরআনের আয়াত, ইসলামিক বিয়ে পোড়ানোর নিয়ম, মোবাইলে বিয়ে করার নিয়ম, সুন্নতি বিয়ের নিয়ম ও বিবাহ পদ্ধতি। এই সকল বিষয় নিয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে তাই আপনি যদি ইসলামিক সঠিক পদ্ধতিতে বিবাহ করতে চান? তাহলে এই আর্টিকেল স্টেপ বাই স্টেপ শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের নিয়ম pdf

প্রিয় পাঠক, আমরা আজকে আপনাদের জানাবো জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কাঙ্খিত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব সেটি হলো শুভ বিবাহ। দুটি মানুষ একত্র হওয়া দুটি প্রাণের আপন হওয়ার এক বরকতময় মাধ্যম হচ্ছে বিয়ে। বিয়ের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা মানব জাতিকে এক পবিত্র ও সুন্দর জীবন যাপন করার সুযোগ করে দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। 

আমাদের আগামী প্রজন্ম পবিত্র ও নিরাপদ হওয়ার জন্য বিবাহের গুরুত্ব কোন বিকল্প নেই। তাই ইসলাম ও বিয়ে এই দুটির মাধ্যম সম্পর্কে এই স্টেপে জানতে পারবেন, তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশুদ্ধভাবে বিয়ের নিয়ম সম্পর্কে।

বিয়েকে রাসুল সাঃ দিনের অর্ধেক ভাগের সাথে তুলনা করেছেন, এবং কিসের ভিত্তিতে বিয়েটি সম্পূর্ণ হবে এটিও রাসূল সাঃ উল্লেখ করেছেন তিনি স্পষ্টভাবে অভিভাবকদের লক্ষ্য করে বলেছেন যে কোন মুসলিম ছেলের দ্বীনদার হয় ও ব্যবহার যদি ভালো হয় এবং তোমাকে যদি সন্তুষ্ট করে তবে তোমার মেয়েকে তার সাথে বিবাহ দাও। এর অন্যথায় হলে পৃথিবীতে ফিতনা ও দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়বে রাসূল সাঃ ভয় দেখিয়েছেন।

কিন্তু আমাদের দেশে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছেলে দেখা মানে ছেলেদের ধন-সম্পদ দেখা ছেলে সরকারি চাকরিজীবী কিনা দেখা এবং কি বংশ মর্যাদা দেখা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ছেলে দেখা এটি নয়! ছেলে দেখতে হবে ছেলে ধার্মিক কিনা ছেলে ভদ্র কিনা ছেলে কুরআন শিক্ষা করেছে কিনা এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানার পরেই আপনি আপনার মেয়েদের তার সঙ্গে বিবাহ দিতে পারেন, এতে করে সামনের প্রজন্ম অনেক সুন্দর হবে।

এর ব্যতিক্রম যদি আপনারা করেন যেমন বেপর্দা ছেলে মেয়েদের সঙ্গে যদি আপনার ছেলেমেয়েদের বিবাহ দেন তাহলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে এবং ইসলামী দিন থেকে তারা সরে পড়বে তাই অবশ্যই ইসলামিক নিয়ম কানুন মেনে আপনার ছেলে মেয়েদের বিবাহ সম্পন্ন করুন। এতে করে আল্লাহ তা'য়ালার রহমত বর্ষিত হবে, যা রাসূল সাঃ উল্লেখ করেছেন।

তাই বিশুদ্ধভাবে ছেলে মেয়েদের বিবাহ সম্পন্ন করুন, ছেলে মেয়েদের বিয়ে সম্পন্ন করার নিয়ম হলো ছেলে মেয়েদের উভয়ের মতামত জানান এবং তাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে বিবাহ দেওয়া ।

বিয়ে নিয়ে ইসলামিক উক্তি

প্রিয় পাঠক, একটি আদর্শ বিয়ে সম্পন্ন করতে চাইলে ছেলে মেয়েদের উভয়েরই আদর্শবান হওয়া উচিত! তাহলেই বিবাহ আদর্শ হবে। কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বিয়েতে যেন খুব খরচ বা খুব জাকজমক না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং বিবাহের বাড়িতে সকল মহিলা যেন হিজাব পরিধান করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

এবং রাসুল সাঃ বলেছেন শ্রেষ্ঠ বিয়ের সেটি যে বিয়েতে বেশি খরচ হয় না। কেননা বিবাহ এতটাই সহজ করে দাও যাতে করে জেনা কঠিন হয়ে যায়। তাই অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে বিয়ে যাতে অত কঠিন না হয়ে যায় সে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাহলে ওই বিয়েটাই শ্রেষ্ঠ বিয়ে হিসেবে উল্লেখ হবে।

বিয়ে নিয়ে কোরআনের আয়াত

বিয়ে নিয়ে কোরআনের আয়াত

ইসলামিক বিয়ে পড়ানোর নিয়ম

প্রিয় পাঠক, আমাদের দেশে প্রচলিত বিয়ে পোড়ানোর পদ্ধতি একদমই ভুল! যেভাবে সঠিক পদ্ধতিতে বিয়ে পোড়াতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • আমাদের দেশে বিয়ে পড়ানোর সময় সাক্ষী রাখে ৪ টি এটা একদমই হারাম। সঠিক পদ্ধতিতে সাক্ষী নিয়োগ করতে হবে বিশুদ্ধভাবে বিবাহ সম্পন্ন করতে চাইলে সাক্ষী রাখতে হবে ২ টি।
  • বিবাহ পোড়ানোর পদ্ধতিতে মেয়ের কাছে বিবাহ পোড়ানো যাবে না এটি হারাম। শুধুমাত্র ছেলের কাছেই বিয়ে পড়াতে হবে।
  • বর কনেকে সামনে রেখে, কোরআন মাজিদের আয়াত তিনটি পরে হাম সালাফ পড়ে, মেয়ের পিতা বলবেন মেয়ের নাম ধরে বলবেন আমার মেয়ে ফাতেমা এত টাকা নগদ এত টাকা বাকি রেখে আমার মেয়ে ফাতেমা তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি, তুমি তাকে স্ত্রী হিসেবে কবুল করো। ছেলেটি তখন বলবেন, কাবিলতো আরবিতে অথবা কবুল করলাম।
  • বিবাহ সম্পন্ন হবার পর, বর যিনি বিয়ে করলেন এবং বাকি সব বৈঠকের সবাই হাত তোলে দোয়া করবেন দোয়াটি হল, বারাকাল্লাহ হুলাকা ওয়াআলাইকা ওয়াজামা বায়না বি খায়ের। অর্থ হলঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুক এবং তোমাকেও তোমার স্ত্রীকে দুজন এর উপরেই বরকত দান করুক আর তোমাদের দু'জনকে কল্যাণের উপর রাখুক।
এটি সঠিক বাস্ত বিবাহ পড়ানোর নিয়ম। তাই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনারা আপনাদের ছেলে মেয়েদের বিবাহ সম্পন্ন করুন, এতে করে রাসূল সাঃএর নির্দেশ মেনে বিবাহ সম্পন্ন হবে।

মোবাইলে বিয়ে করার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, মোবাইল ফোনে বিবাহ করা যাবে তবে প্রতারণার শিকার যদি না হয় তবেই মোবাইল ফোনে বিবাহ করা যেতে পারে। যেমন ছেলের পাশে ও লোকজন থাকতে হবে পরিচিত এবং মেয়ের পাশে পরিচিত মানুষ থাকতে হবে। যাতে করে প্রতারিত শিকার না হয় এইভাবে যদি আপনি আপনার ছেলে মেয়েদের বিবাহ মোবাইল ফোনে দেন
তাহলে মোবাইল ফোনে বিবাহ দিতে পারবেন। এবং কি ভিডিও কলের মাধ্যমে সরাসরি দেখার মাধ্যমে আপনি যদি আপনার ছেলে মেয়েদের মতামত সাপেক্ষে মোবাইল ফোনে বিয়ে দিতে চান তাহলে দিতে পারবেন, তবে শর্ত একটি যাতে করে দুজনার কেউই প্রতারিত না হতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সুন্নতি বিয়ের নিয়ম

বিবাহর পূর্বে কনের কাছ থেকে অবশ্যই সম্মতি নিতে হবে। বিবাহর ক্ষেত্রে পাত্র পাত্রীর উভয়েরই একসঙ্গে কথাবার্তা বলে দুজনেরই সম্মতি থাকলে তবেই বিবাহ দিতে পারবেন। (সূরা আন নিসা) কোন অবস্থাতেই আপনি আপনার ছেলে মেয়ে দের অসম্মতিতে তাদেরকে বিবাহ করতে বাধ্য করা উচিত নয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন হে ঈমানদারগণ, তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা জোর করে নারীদের ওয়ারিশ হবে (সূরা আন নিসা, আয়াত নং ১৯)

হরযত আবু সালামা রাহমাতুল্লাহ থেকে বর্ণিত,আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, বিবাহিত নারী বা কুমারী নারী তাদের অনুমতি ছাড়া বিবাহ দেওয়া যাবে না। সাহাবারা জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহ রাসূল! তাহলে আমরা তাদের কিভাবে অনুমতি নেব, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাদের চুপ থাকার মানেই হল অনুমতি (বুখারী ৫১৩৬)
অনুমতি নেবার পর অভিভাবক যিনি বিয়ে পড়াবেন যদি সক্ষম হয়ে থাকেন কিংবা যিনি বিবাহ পোড়াবেন তিনি বিবাহের খুতবা পাঠ করবেন। এরপর মেয়ের পিতা মেয়ের পরিচয় ও দেনমোহরের বিষয় উল্লেখ করবেন। এবং বর বলবেন, আরবিতে কাবিলত অথবা কবুল করলাম। এভাবে বিয়ে পড়ালেই সুন্নতি বিয়ের নিয়মকানুন মানা হবে। (তিরমিজি ১১০১)

পোস্ট ট্যাগ

ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের নিয়ম pdf,বিয়ে নিয়ে ইসলামিক উক্তি,বিয়ে নিয়ে কোরআনের আয়াত,ইসলামিক বিয়ে পড়ানোর নিয়ম,কালিমা পড়ে বিয়ে করার নিয়ম,মোবাইলে বিয়ে করার নিয়ম,সুন্নতি বিয়ের নিয়ম,বিবাহ পদ্ধতি।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেল থেকে সুন্নতি বিয়ের নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছে। এরপরেও যদি আপনাদের কোন মতামত বা জিজ্ঞাসা থেকে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলের নিচে দেওয়া কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে আপনার মন্তব্য প্রকাশ করবেন ধন্যবাদ

আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌঁছে দিবেন "ধন্যবাদ"

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
\