তেলাকুচা পাতার ঔষধি গুন - তেলাকুচা ফলের উপকারিতা - তেলাকুচা পাতার বৈজ্ঞানিকনাম
প্রিয় পাঠক, তেলাকুচা গাছ অনেকের কাছে অতি পরিচিত একটি গাছ আবার অনেকের কাছে
অপরিচিত গাছ এটি। তেলাকচু একটি লতা জাতীয় একটি গাছ এর পাতা গাড়ো সবুজ রংয়ের
হয়ে থাকে এবং এর ফুল সাদা রংয়ের এবং ফল কাঁচায় সবুজ রঙের হয়ে থাকে এবং পাকলে
লাল বর্ণ ধারণ করে।
তেলাকুচা এই উদ্ভিদটি সাধারণত বন জঙ্গল ও রাস্তাঘাট আশপাশ দিয়ে হয়ে থাকইয়। এই
গাছটি বহু রোগ নিরাময় হিসেবে কাজ করে থাকে। এই গাছটি অনেকের কাছে খুব অবহেলিত
কিন্তু এর ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে
তেলাকুচা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলে। তাই
তেলাকুচার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ.
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক, অবহেলিত লতা জাতীয় এই গাছটি আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য যে কতটা
উপকারী এটা হয়তো বা অনেকেই জানেন না? তাই আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা
তেলাকুচা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই আর্টিকেল থেকে
তেলকচা গাছের যেগুলো উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন তা হল,
তেলাকুচা পাতার উপকারিতা, তেলাকুচাপাতা খাওয়ার নিয়ম, তেলাপোতা পাতার ঔষধি
গুনাগুন, তেলাকুছা পাতার রস কোন রোগের উপকারী, তেলাকুছা ফলের উপকারিতা, তেলাকুচা
ফল কি খাওয়া যায়, ও তেলাকুচা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম। এই সকল বিষয় নিয়ে আজকের এই
আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই তেলাকুছা পাতার ঔষধি গুনাগুন
সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেল স্টেপ বাই স্টেপ শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তেলাকুচা পাতার রস কোন রোগে উপকারী
তেলাকুচা গাছ এমন একটি উদ্ভিদ যা আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। তাই চলুন
বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক তেলাকুচা পাতার নানা উপকারিতা সম্পর্কে।
- রুচি বৃদ্ধি করতে তেলাকুচা রসের উপকারিতাঃ তেলাকুচা পাতা ঔষধি গুন সম্পূর্ণ একটি পাতা। যে সকল ব্যক্তির রুচির সমস্যা রয়েছে, বা কোন খাবারের রুচি পান্না তারা নিয়মিত তেলাপোতা পাতার রস খেলে রুচি ফিরে আসবে।
- পাকস্থলীর সমস্যা থেকে তেলাকুচা পাতার রসের উপকারিতাঃ আমাদের অনিয়মিত খাবার গ্রহণের ফলে আমাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, এক কথায় পেট খারাপ পেটব্যথা ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে। পেট ব্যথার মতো কিংবা পেটের যেকোনো ধরনের সমস্যা থেকে পাকস্থলীতে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে নিয়মিত তেলাকুচা পাতার রস খাবার চেষ্টা করুন। যাতে করে আপনার পাকস্থলীর সমস্যা বা পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পান।
- পরিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তেলাকুচা পাতার রসের উপকারিতাঃ পরিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তেলাকুচা পাতার রসের উপকারিতা অনেক কেননা তেলাকুচা পাতার রসে রয়েছে থায়ামিন। যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা থেকে মুক্তি করে, তাই আপনারা যে সকল ব্যক্তি খাদ্যের পরিপাক জনিত সমস্যায় রয়েছেন তারা তেলাকুচা পাতার রস সেবন করুন। এতে করে আপনার পরিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
- অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে তেলাকুচা পাতার রসের উপকারিতাঃ তেলাকুচা পাতার রস শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে বেশি ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত তেলাকুচা পাতার রস সেবন করলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা বাড়তি ফ্যাট কমাতে সাহায্য করবে।
- কিডনির পাথর প্রতিরোধ করতে তেলাকুচা পাতার রসের উপকারিতাঃ যে সকল ব্যক্তির কিডনিতে পাথর হয়েছে, এবং কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পেতে চান? তাহলে আপনাকে তেলাকুচা পাতার রস খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কেননা তেলাকুচা পাতায় থাকা উপাদান কিডনিতে থাকা পাথর প্রতিরোধ করতে বেশ কার্যকারিতা ভূমিকা পালন করে।
- জড়ো হাঁপানি দূর করতে তেলাকুচা পাতার উপকারিতাঃ যে সকল ব্যক্তির জ্বরের সাথে হাঁপানির সমস্যায় ভুগছেন, তারা যদি নিয়মিত তেলাকুচা পাতা সেবন করে তাহলে জ্বর ও হাঁপানি রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
তেলাকুচা পাতা খাওয়ার নিয়ম
তেলাকুচার পাতা ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করে থাকে, এটি খাওয়ার
নিয়ম এর রস সেবন করা যায় পাশাপাশি অন্যান্য শাকসবজির মত এটাকে ভেজেও খাওয়া
যায়। এইভাবে খেলে আপনার পেটের কৃমি এবং দেহের নানা অসুস্থতা থেকে মুক্তি পাবেন
এবং আপনার দেহের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তেলাকুচার পাতা খাওয়ার ভীষণ উপকারী।
তেলাকুচা পাতার ঔষধি গুন
তেলাকুচা এক প্রকার গুণসমৃদ্ধ এক প্রকার ভেষজ উদ্ভিদ। এই গাছের পাতা, লতা, মূল
এবং কি ফলও বিভিন্ন ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়। তেলাকুচা গাছের ফলে রয়েছে, মাস্ট সেল
স্টেবিলাইজিং, এনাফাইলেটিক রোগী এবং এন্টিহিস্টামিন জাতীয় উপাদান রয়েছে এই ফলে।
তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক তেলাকুচা পাতার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
তেলাকুছা পাতার ঔষধি গুনাগুনঃ
- ডায়াবেটিস রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- জন্ডিস দূর করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- স্তনের দুধ স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে তেলাকুচা
- হজম প্রক্রিয়া ভালো করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- আমোসা নিরাময় করতে তেলাকুচা ভীষণ উপকারী।
- কোষ্ঠকাঠিন্য ও হাঁপানি রোগ ভালো করে তেলাকুচা।
- ফোড়া ও ত্বকের ব্রণ নিরাময় করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- পা ফোলা বা পায়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- সর্দি কাশি ভালো করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- শ্বাসকষ্ট ভালো করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- কিডনির পাথর দূর করতে তেলাকুচা ভীষণ উপকারী।
- তেলাকুচা মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
- চুলকানি বা ঘা জনিত সমস্যা তেলাকুচার রস ব্যবহার করলে তা ভালো হয়ে যায়।
তেলাকুচা ফলের উপকারিতা
তেলাকুচা গাছের ফল প্রথম অবস্থায় কাঁচা গারো সবুজ রঙের হয়ে থাকে এবং পাকলে লাল
বর্ণ ধারণ করে।
তেলাকুচা ফল কি খাওয়া যায়?
তেলাকুচা ফল খাওয়া যায় কি উত্তরে বলবো হ্যাঁ, তেলাকুচা ফল আপনি খেতে পারেন তবে
সাধারণত পাকা ফল থেকে কাঁচা ফল খাওয়াই বেশি প্রচলিত রয়েছে।
- কাঁচা তেলাকুচাঃ কাঁচা তেলাকুচা স্বাদ প্রায় শসার মত। ভাজি কিংবা রান্না করেও তেলাকুচা ফল খাওয়া যায়।
- পাকা তেলাকুচাঃ পাকা তেলাকুচা ফল হালকা মিষ্টি হয়ে থাকে তবে, যে সকল মানুষের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য পাকা ফল খেলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে।
- তেলাকুচার উপকারিতাঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে তেলাকুচা।
- তেলাকুচার উপকারিতাঃ তেলাকচায় রয়েছে, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, আইরন এবং ভিটামিন সি এর উৎস রয়েছে।
- তেলাকুচার উপকারিতাঃ মাথা গরম হলে তেলাকুছা ব্যবহারের ফলে মাথা ঠান্ডা হয়।
তেলাকুচা খাবার ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ
- খুব অল্প পরিমাণে তেলাকুচা খাবার চেষ্টা করুন, যদি তা হয় প্রথমবারের জন্য। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খেলে এলার্জি কিংবা শ্বাসকষ্ট সমস্যা হতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলা ও এক মাসে বয়সী শিশুর মা তেলাকুচা সেবনের পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন।
তেলাকুচা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম
তেলাকচা আমরা অনেকেই চিনি কিন্তু তেলাকচার বৈজ্ঞানিক নাম আমরা অনেকেই জানিনা তাই
চলুন জেনে নেওয়া যাক তেলাকচার বৈজ্ঞানিক নাম কি।
তেলাকচার বৈজ্ঞানিক নাম হলঃ Coccinia grandis.
তেলাকচার ইংরেজি নাম হলঃ
Lvy gourd, Baby Watermelon, little gourd.
বাংলাদেশের মানুষেরা তেলাকুচাকে বিভিন্ন নামে চিনে থাকেন। যাইহোক যায় যে নামে
চিনুক না কেন তেলাকুচার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের মানব শরীরের জন্য ভীষণ
উপকারী।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেল থেকে তেলাককুচার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। এরপরেও যদি আপনাদের কোন মতামত বা
জিজ্ঞাসা থেকে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলের দোয়া কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে আপনার
মন্তব্য প্রকাশ করবেন "ধন্যবাদ"
আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে
অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌঁছে দিবেন
ধন্যবাদ।
ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url