প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত - কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

আপনার পছন্দ হতে পারে এমন পোস্ট রয়েছে ক্লিক করুনপ্রিয় পাঠক, আপনি যদি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত তা জানতে চান? তাহলে আপনাকে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে আগে জানতে হবে। তবেই আপনি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খেতে পারবেন তা জানতে পারবেন। তাই আপনার জন্যই আজকের এই আর্টিকেল এই আর্টিকেলে কিসমিসের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত - কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

এছাড়াও কিসমিস ভেজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু কিসমিস শুকনো আঙ্গুর তাই এটি খাওয়ার নিয়ম জানা অতি জরুরী তাই আপনি যদি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত ও কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলের প্রত্যেকটি স্টেপ ধরে ধরে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি উপকৃত হবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত - কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
.

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত? তা এই স্টেপ থেকে জানতে পারবেন তাহলে চলুন প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত জেনে নেওয়া যাক।

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও শর্করা আর আপনারা জানেন যে শরীরে যত বেশি ক্যালরি তৈরি হবে শরীরের শক্তির পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি হতেও শুরু করবে তাই অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়। তবে সঠিক পরিমাণ মতো আপনি যদি কিসমিস সেবন করতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

১০০ গ্রাম কিসমিসে ক্যালরির পরিমাণ রয়েছে প্রায় ৩০০ আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক ক্যালরির প্রয়োজন হয় ২০০০ থেকে ৩০০০ আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রতিদিন ক্যালরি প্রয়োজন হয় ১৫০০ থেকে ২৫০০। অর্থাৎ আপনি দিনে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যন্ত কিসমিস সেবন করতে পারেন। ২০ থেকে ২৫ গ্রাম কিসমিস থেকে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ ক্যালরি উৎপন্ন হয়।

তাই আপনি যদি দিনে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম কিসমিস সেবন করেন তবে আপনার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। তবে এর চেয়ে বেশি পরিমাণ কিসমিস আপনি যদি সেবন করেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই উপকারিতা হবে না বরং ক্ষতি হতে পারে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

অনেকেই বিভিন্ন রান্নার কাজে কিসমিস ব্যবহার করে থাকেন যার ফলে রান্নার স্বাদ দ্বিগুণ হয়ে যায়। অনেকেই এমনিতেও কিসমিস খেয়ে থাকেন তবে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞের মতে কিসমিস রান্নায় বা এমনিতে না খেয়ে ভিজিয়ে খেলে উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
  • ভেজানো কিসমিস হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ ভেজানো কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার উপাদান থাকে যা হজম শক্তি স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যায়।
  • ভেজানো কিসমিস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ ভেজানো কিসমিস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। কারণ অতিরিক্ত রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণ থাকলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে। এছাড়াও কিসমিসে রয়েছে পটাশিয়ামের মত খনিজ উপাদান যা হৃৎপিণ্ড ভালো রাখার জন্য ভীষণ উপকারী।
  • ভেজানোর কিসমিস প্রচুর পরিমাণে আয়রন সমৃদ্ধঃ কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। যার ফলে শরীরে আয়রনের অভাব জনিত রোগ অ্যানিমিয়া ও রক্তস্বল্পতা কমাতেবিশেষ ভূমিকা পালন করে ভেজানো কিসমিস।
  • ভেজানো কিসমিস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ ভেজানো কিসমিসে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট। আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ভেজানো কিসমিস শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করেঃ কিসমিস ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ যা শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে কিসমিস।
  • ভেজানো কিসমিস ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকেঃ শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ভেজানো কিসমিস বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কারণ কিসমিসে রয়েছে ফাইবার, যা দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে বারবার খাবার খেতে হয় না যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • ভেজানো কিসমিস ত্বকের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করেঃ ভেজানো কিসমিসে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। কিসমিসে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
  • ভেজানো কিসমিস দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ ভেজানো কিসমিস চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়তে ভীষণ উপকারী। কিসমিসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এবং চোখমুখে বয়সের ছাপ ও চোখের আবছা সমস্যা প্রতিরোধ করে চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ভেজানো কিসমিস।

কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা

কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিসমিস অত্যন্ত সুস্বাদুকর মিষ্টি হওয়ায় এতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ রয়েছে। আর এই গ্লুকোজ আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের খনিজ রয়েছে, যেমন; লৌহ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ইত্যাদি।

কিন্তু অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে কোন কিছুই অতিরিক্ত গ্রহণ করা শরীরের জন্য ভালো নয়। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ কিসমিস সেবন করে তাহলে তার শরীরের উপকারিতার বদলে অপকারিতা বা ক্ষতি হতে পারে।

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

কিসমিস আপনি শুকনো খেতে পারেন এবং ভিজিয়েও খেতে পারেন বরং শুকনো কিসমিস খাওয়ার চেয়ে ভিজিয়ে কিসমিস সেবন করতে পারলে উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। তবে দিনে ৮ থেকে ১০ টি করে আপনি কিসমিস সেবন করতে পারেন। অর্থাৎ একটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ দিনে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যন্ত কিসমিস সেবন করতে পারে। এর বেশি কিসমিস সেবন করলে শরীরের উপকারের বদলে ক্ষতি হতে পারে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

কিসমিস ভেজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই স্টেপটি আপনার জন্য কেননা এই স্টেপে কিসমিস ভিজিয়ে খাবার নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে । তাহলে চলুন কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।

আপনি যদি কিসমিসের সঠিক উপকারিতা পেতে চান তবে রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে এক গ্লাস পানিতে ৮ থেকে ১০ টি কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে কিসমিস গুলো ধুয়ে নিন এবং সেই পানি পান করুন এবং ভেজানো কিসমিস খেয়ে নিন। এইভাবে আপনি যদি কিসমিস ভিজিয়ে সেবন করেন তাহলে কিসমিস থেকে যথেষ্ট উপকারিতা পাবেন।

কিসমিস ভিজিয়ে খেলে কোন উপকারিতা হয় না। তবে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না আপনি যদি অতিরিক্ত কিসমিস সেবন করেন তবে আপনার গ্যাস্ট্রিক বা পেট ফাঁপা এবং কি ডাইজিয়ার মত সমস্যা হতে পারে তাই অবশ্যই পরিমাণ মতো কিসমিস সেবন করুন।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেল থেকে প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত ও কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন, এবং উপকৃত হয়েছেন। এরপরও যদি আপনাদের কোন মতামত জিজ্ঞাসা থেকে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলের নিচে দেওয়া কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে আপনার মন্তব্য প্রকাশ করবেন।

আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার দিয়ে পৌঁছে দিবেন। এত দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য "ধন্যবাদ"

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইমরান এ আই এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
\